শিরোনাম

শুভ জন্মদিন মাশরাফী

 

২০১৪ সালের কথা। একের পর এক ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ক্রিকেট তখন বাজে সময় পার করছিল। নেতৃত্ব তুলে দেয়া হলো মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কাঁধে। শিকার ভুলতে বসা টাইগাররা যোগ্য নেতা পেয়ে হঠাৎ হয়ে উঠে ভয়ংকর। তাদের গর্জনে কুপোকাত হতে থাকে ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাশক্তিরা। বাংলার ক্রিকেটে দিন বদলের গল্প লেখা মাশরাফী তাই মুশফিকুর রহিমের কাছে কিংবদন্তি। টাইগারদের সাবেক সফল অধিনায়ককে তাই মিস্টার ডিপেন্ডেবল জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কিংবদন্তি কথাটি উল্লেখ করেই।

 

১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইলে জন্মগ্রহণ করেন মাশরাফী। তবে আজকের মাশরাফীকে বাংলাদেশ প্রথম চিনেছিল ২০০১ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। তার আগ্রাসী বোলিং মন কেড়েছিল টাইগার সমর্থকদের। কিন্তু হাঁটুর ইনজুরি এ পেসারকে ভুগিয়েছে বেশ। ইনজুরি আর বিশ্রামে ক্যারিয়ারের শুরুটা ঠিকঠাক রাঙাতে পারেননি তিনি।

 

কিন্তু অদম্য নড়াইল এক্সপ্রেস। তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি দুপায়ের একাধিক অস্ত্রোপচারও। খেলা চালিয়ে গেলে পঙ্গু হতে পারেন- ডাক্তারদের এমন সতর্কবার্তার পরও ছাড়েননি ক্রিকেট। ২০০১ সালে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও নতুন রূপে নিজে আবির্ভুত হন ২০১৪ সালে। আজকের বাংলাদেশ যে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজেদের শক্তিশালী দাবি করে, তার পেছনে বড় ভূমিকা এ মাশরাফীর।

এই ফরম্যাটে মুশফিকের নেতৃত্বে টানা ১২ ম্যাচ হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের চেয়েও সে সময় সমর্থকদের কাছে সবচেয়ে বেদনার ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে হার। চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া বিসিবি কর্তারা অনেক ভেবেচিন্তে দায়িত্ব তুলে দেন মাশরাফির কাঁধে। যোগ্য নেতা পেয়েই এরপর যেন ক্ষুধার্ত টাইগাররা নেমে পড়েন একের পর এক শিকারে।

 

শুরুটা জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার মাধ্যমে। এরপর আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে যাত্রা। বিশ্বকাপ পরবর্তী মিশনে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান। অল্পের জন্য রক্ষা মেলে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার। মাশরাফীর অধীনে ৮৮ ওয়ানডে ম্যাচের ৫০টিতেই জয় পায় বাংলাদেশ।

 

টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য তখনো কিছুটা পিছিয়ে ছিল টাইগাররা। তার নেতৃত্বে ২৮ ম্যাচে ১৭ হারের বিপরীতে ১০টিতে জয় পায় টাইগাররা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাশরাফী শেষবার মাঠে নেমেছেন ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাঠ থেকে ২০১৭ সালে বিদায় নিলেও ওয়ানডে ক্রিকেটে তার বিদায়টা হয়েছে নীরবে।

 

মাশরাফী বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা। শত বাধা পেরিয়ে, একাধিক ইনজুরির ধাক্কা সামলেও ক্রিকেটের প্রতি তার যে ভালোবাসা তাতে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন সমর্থকদের মনের গভীরে। বাংলার ক্রিকেটে যে কজন তারার উদয় হয়েছিল, সেখানে সবার চেয়ে উজ্জ্বল ও ঝলমলে মাশরাফী।

 

 

তার ৩৯তম জন্মদিনে সামাজিক মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকেই। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন কিংবদন্তি আপনার জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল।’

 

মাশরাফীর একসময়ের সতীর্থ ও বন্ধু নাফিস লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। আপনার সাথে কাটানো সময়গুলো বেশ উপভোগ্য। ভালো থাকবেন।’

 

অন্যদিকে দেশের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার আতহার আলীর কাছে মাশরাফী সবসময় একজন চ্যাম্পিয়নের নাম। তিনি লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন চ্যাম্প। দিনটির জন্য অনেক শুভকামনা’

দলের তরুণ অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন মাশরাফী ভাই, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।’

 

 

Be the first to comment on "শুভ জন্মদিন মাশরাফী"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*