দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের চাকরিচ্যুত অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরা সুলতানা পপির বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণ, নানা অনিয়ম, পূর্ব অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি, অনৈতিক সুবিধা দাবি এবং চাকরিরত অবস্থায় নিয়মবহির্ভূতভাবে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কারণেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সিটি ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইনের ব্যক্তিগত সহকারী মনিরা সুলতানা পপির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা বিরোধী নানা অভিযোগ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছিল। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পে-রোল ব্যাংকিং বিভাগে তাকে বদলি করা হয়। বদলির পর থেকে মনিরা সুলতানা পপি দীর্ঘদিন কর্মস্থলে কোনো ধরনের পূর্ব অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের নিয়ম ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাকে তিনবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে নোটিস পাঠায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তারপরও তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় এবং অননুমোদিত অনুপস্থিত থাকায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে অব্যহতি পান। বর্তমানে প্রভিডেন্ট ফান্ড ঋণ, হাউজ বিল্ডিং ঋণ, ক্রেডিট কার্ড ও গাড়ির ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ খাতে মনিরা সুলতানা পপির কাছে তার চাকরিরত থাকাকালে যাবতীয় প্রাপ্ত টাকা সমন্বয় করার পরও ব্যাংকের প্রায় ১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এসব ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য তাকে নোটিসও দেয়।
সূত্র আরও জানায়, ব্যাংকের পাওনা প্রায় ১ কোটি টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য নানা টালবাহানা করেন মনিরা সুলতানা পপি। পাশাপাশি চাকরিরত অবস্থায় লেগেসি মেকওভার (বিউটি পার্লার), লেগেসি ইন্টারন্যাশনাল প্রি স্কুল অ্যান্ড ডে-কেয়ার (স্কুল), লেগেসি গ্লোবাল কনসালটেন্সি (এজেন্ট ব্যাংকিং), এনএমসি এন্টারপ্রাইজ (এজেন্ট ব্যাংকিং) নামে চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন তিনি। যা সিটি ব্যাংকের সঙ্গে তার চাকরির শর্তের পরিপন্থি। ।
এইসব অনিয়মের কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলে পপি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব্যাংকের প্রধান তিন প্রধান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। এতে প্রত্যাখাত হওয়ার পর চাকরিচ্যুত পপি তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বলে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারি সূত্রে জানা গেছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিচ্যুত ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরা সুলতানা পপি বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবির মামলা করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ব্যাংকের ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কোর্ট অপারেশন এ কে এম আইয়ুব উল্যা বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারেও উল্লেখিত বিষয়গুলিই তুলে ধরা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স ম কাইয়ূম বলেন, সিটি ব্যাংকের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে। -পূর্বপশ্চিমবিডি
Be the first to comment on "ব্যাংকের চাকরির আড়ালে ব্যবসা পরিচালনা করতেন পপি"