শিরোনাম

মুন্সীগঞ্জে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

 

মোজাম্মেল হোসেন সজল।। মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শুক্রবার বন্ধের দিন থাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীদের ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্টসহ অন্যান্য পরীক্ষা বাইরে থেকে করতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

মুন্সীগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৩৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি।

এদের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন, সিরাজদিখানে ৫ জন এবং শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৪ জন, সিরাজদিখানে দু’জন ও শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একজনসহ মোট ৭ জনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।  সবমিলিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ১২ জনসহ তিনটি হাসপাতাল থেকে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

জেলা সিভিল সার্জন বলেন, ডেঙ্গু পরীক্ষার ডিভাইস দিয়ে (ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্ট) ১৫০ জনকে পরীক্ষা করতে পারবেন। এ পর্যন্ত ৫৬ জনকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় কারও ডেঙ্গু ধরা পড়েনি। মুন্সীগঞ্জে যারা ডেঙ্গু রোগী তারা ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়নি বলে

সিভিল সার্জন দাবি করেন। তবে, ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্ট প্রয়োজনবোধে আরও সরবরাহ করা হবে।

 

এদিকে, হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথা থাকলেও ময়লা আবর্জনা দেখা গেছে হাসপাতালের ভেতরেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ যাবতীয় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলে রোগীদের অভিযোগ। এতে দরিদ্র রোগীদের হিমশিম পোহাতে হচ্ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যাই বেশি।

 

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তোফাজ্জল হোসেন জানান, কিছু কিছু পরীক্ষা রোগীদের বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। বন্ধের দিনসহ অন্যান্য দিনে ডেঙ্গু সনাক্তকরণ করার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালেই করা যাচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের বেশির ভাগ আশপাশের এলাকা থেকে এসেছে। সাপ্লাই সীমিত হওয়ায় দরিদ্র ও ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি তাদেরকে ডেঙ্গু স্পিরিং টেস্ট করা হচ্ছে।

 

সদর উপজেলার হাতিমারা থেকে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি এক ডেঙ্গু রোগী জানান, পাঁচ দিন ধরে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি একজন মুদি দোকানদার। ডেঙ্গু পরীক্ষা থেকে শুরু করে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং স্যালাইন, ওষুধ সবই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

 

তিনি আরও জানান, তার ডেঙ্গু মুন্সীগঞ্জেই হয়েছে। তিনি দুই থেকে তিন মাস ধরে ঢাকায় যান না বলেও জানিয়েছেন।

 

দুর্গাবাড়ি থেকে থেকে আসা এক নারী রোগী জানান, তিনি আট দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। আজ (শুক্রবার) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাইরে থেকে ওষুধ, স্যালাইন কিনে এনেছেন। কিন্তু কোন ডাক্তার, নার্স স্যালাইন পুশ করতে আসছে না।

 

মালিরপাথরের হতদরিদ্র মা-বাবা তার শিশু কন্যাকে নিয়ে এসেছেন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। শহরের সুপার মার্কেটের মডার্ন নামে একটি ডায়াগনস্টি সেন্টার ৮৫০ টাকায় পরীক্ষা করেছেন। ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়েনি। এছাড়া স্যালাইন, ওষুধও বাইরে থেকে কিনে এনেছেন তারা।

 

চরকেওয়ারের এক নারী তার শিশুপুত্রকে নিয়ে আজ সকালে হাসপাতালে এলে তার ঠাঁই মিলেছে হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে। তাকে বাইরে থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি পরীক্ষা না করে হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে, স্যালাইন-ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে তাকে।

 

 

 

Be the first to comment on "মুন্সীগঞ্জে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*