পরম সৃষ্টিকর্তা রাব্বুল আলামিন তার অশেষ রহমতে এই পৃথিবী ও আঠার হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হবে। দুনিয়াতে সুন্দর সঠিক পথে আমাদের জীবন প্রতিপালনের জন্য আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন কোরআনের আলোকে জীবন বিধান। আমাদের সঠিক সত্য পথে চলমান থাকার জন্য জীবনে কোরআনের গুরুত্ব অপরিসীম।
কোরআনে সূরা বাকারা ২১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মানুষ তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত করো, যিনি তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বসূরিদের সৃষ্টি করেছেন। তাহলেই তোমরা নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।উক্ত আয়াত দিয়ে আমাদের মাবুদ আমাদের সঠিক ও সত্য পথে চলমান হওয়ার কথা বলেছেন যাতে শেষ বিচারে আল্লাহর নিকট যেয়ে নিজেদের কল্যাণে ধাবিত করতে পারি। সূরা বাকারা ২৭৭ নং আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা দেন, নিশ্চয় যারা সত্যে বিশ্বাস করে, সৎ কর্ম করে নামাজ কায়েম করে যাকাত আদায় করে তাদের প্রতিপালন তাদের প্রতিপালকের কাছে সংরক্ষিত। তাদের কোন ভয় বা পেরেশানী থাকবে না।
আল্লাহর হুকুম আমাদেরকে মেনে চলতে হবে, প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ ( সা:) এর দেখানো পথে ইসলামে কোরআন সূন্নাহের আলোকে জীবন পরিচালনা করতে হবে। শরিয়তের রোকনগুলো সঠিক ভাবে পালন করতে হবে। রাসূল সা: এরশাদ করেছেন আদম সন্তানের দেহে এক টুকরা মাংসের খন্ড রয়েছে উহা সূস্থ থাকলে সমস্ত দেহ সুস্থ থাকে। আর উহা খারাপ হলে সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। উহাই হলো কলব বা অন্তকরণ। তাই এই কলবকে সুস্থ রাখতে হলে আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। আল্লাহর জিবির আযকারে কলব জিন্দা রাখতে হবে।
বোখারী ও মুসলিম শরীফে রাসূল ( সা:) সাহাবীদের নছিয়ত করতে গিয়ে বলেছেন, নামাজ বান্দার সমস্ত গুনাহ নিশ্চিহ্ন করে দেয়। উদাহরন স্বরূপ বলেছেন তোমাদের বাড়ির পাশে যদি একটি পানির নহর থাকে এবং তাতে যদি দৈনিক ৫ বার তুমি গোসল কর তাতে তোমার শরীরে যেমন কোন ময়লা থাকতে পারে না তদ্রুপ ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে কোন গুনাহ থাকতে পারে না। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে আমাদের জীবন বিধানের সকল তথ্য নিহিত রয়েছে।
আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহে অসংখ্য ফজিলত ও ইসমে আযম রয়েছে। প্রতিনিয়ত জিকির করে একমাত্র প্রতিপালককে স্মরণে রাখতে হবে। শেষ বিচারের দিনে আমাদের সকল কিছুর হিসাব দিতে হবে। আমাদেরকে সম্পদ করতে হবে আখিরাতের জন্য। ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এক আল্লাহর পথে আত্মসমর্পন করতে হবে। কোরআনকে ও হাদিসকে বুঝতে হবে। কেননা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন মৃত্যু। প্রত্যাহ মৃত্যুকে স্মরণ করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের জীবন সহজ সরল করার জন্য পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে আমাদেরকে সতর্ক করেছেন। সূরা আনআমের ২২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, আর যেদিন আমি সকল মানুষকে সমবেত করবো,স্রষ্টার ক্ষমতার অংশীদার রূপে যাদের কল্পনা করতে,আজ তারা কোথায়? এই আয়াতই বলে দেয়, শেষ বিচারের দিনে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউই সাহায্য করার সহযোগিতা করতে পারবেন না। কেননা শিরক করা আল্লাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করতে পারেন আবার নাও কেতে পারেন। সূরা আনআমের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দেন, আল্রাহর সামনে সমবেত হওয়াকে যারা মিথ্যা বলছে,তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থ। যখন কেয়ামত হবে তখন ওরা বলবে, হায়! এই বিষয়টিকে আমরা কতই না অবজ্ঞা করেছি! পাপের বোঝা পিঠে নিয়েই ওদের চলতে হবে।অবলোকন কর কত রা নিকৃষ্ট এই পাপের বোঝা।
আমাদেরকে প্রতিনিয়ত আল্লাহকে রাজি খুশি রাখার জন্য তার পথে চলতে হবে। দান করতে হবে। আসুন ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত হই। এই চমৎকার সৃষ্টিজগতে নিজেদের কল্যাণ করি। আমাদের জনম হতে ফুল বাগিচায় ফুটুক অসংখ্য কলি। কোরআন পড়ুন নিয়মিত। মসজিদ মাদ্রাসায় বাড়ুক প্রেম। আমাদেরকে সৃষ্টিকর্তা হেদায়েত প্রাপ্ত করুন।
—— দৈনিক সভ্যতার আলো
Be the first to comment on "কোরআনের আলোকে সহজ জীবন বিধান ।। মাহবুব আলম জয়"