নাজমুল মোল্লা সিরাজদিখান প্রতিনিধি : যারা ধর্ষক তাদের কোন ধর্ম নেই,কোন ধর্মেই পাপ কাজের কোন স্থান নেই, ধর্ষকরা কোন মানুষ না তারা সমাজের জঘন্নতম কীট” শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশফিকুন নাহার গোয়ালখালী গ্রামের মেধাবী স্কুল ছাত্রী সেতু মন্ডলের বাড়ীতে স্ব-শরিরে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন এবং নিহত সেতু মন্ডলের পরিবারের সাথে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি আরো বলেন, ধর্ষকদের কোন ধর্মের মধ্যে ফেলা যাবে না। কাজেই তাদের জন্য কেন নিদির্ষ্ট ধর্ম প্রতিবাদ করবে? আমরা সকলে মিলে এই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবো এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করবো। সেতু মন্ডলের আতœহত্যা এটিকে একভাবে বলবো একটি হত্যাকান্ড। শুধু আতœহত্যা বললে ভুল হবে কারণ আমরা তার মা বোনের কাছ থেকে যে বক্তব্য পেয়েছি তাতে এটাই বোঝা যাচ্ছে তাকে জোর করে হোক বা প্রলোব্ধ করেই হোক যেই ছেলেগুলোর নাম এসেছে তারা তাকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে করেছে এবং পরবর্তীতে হয়ত তাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেছে। মেয়েটি তার পরিবারের কাছে ফিরে আসার পর মানসম্মানের ভয়ে হয়ত তার পরিবারের কিছু ভুল ছিল। তারা আমাদের কাছে আগে সরনাপন্ন হলে আমরা হয়ত মেয়েটির জীবন রক্ষা করতে পারতাম।
এখন যেহেতু সেটি আমাদের হাতে নেই, মেয়েটি আতœহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু যারা দোষী তাদের শাস্তি অবশ্যই হবে। তাদেরকে আমরা মোটামুটি শনাক্ত করতে পেরেছি। দুইজনকে অলরেডি আটক হয়েছে। বাকী আরো কয়েকজন সন্দেহভাজন মনে করা হচ্ছে। তাদেরকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমরা এবিষয়ে সর্বোচ্চ দৃষ্টি রাখছি। ইতোমধ্যে আমাদে কাছে একটি নির্দেশনা এসেছে প্রতিটি স্কুলে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ মূলক একটি কমিটি গঠনের জন্য। আমরা খুব শিঘ্রই সেটিকে বাস্তবায়ন করবো। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কান্তা পালসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবগ।
এদিকে নিহত সেতু মন্ডলের মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করে বলেন, গোলাম বাজার থেকে পুলিশ তার মেয়েকে উদ্ধার করার পর সেতুর পরিবার তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে তাদের কাছে ১ লক্ষ টাকা দ্বাবী করে গোলামবাজার পুলিশ ফাঁরির ইনচার্জ এস,আই কবিরুল ইসলাম। সেতুর মা ১ লক্ষ টাকা দিতে অপরাকতা প্রকাশ করার পর এস,আই কবিরুল ইসলাম সেতুকে কোর্টে প্রেরণ করার হুমকি দেয়। পরে সেতুর মা তার প্রবাসী স্বামীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা এনে এস,আই কবিরুল ইসলাম দিয়ে তার মেয়েকে ফারি থেকে ছাড়িয়ে আনেন। কান্তারত অস্থায় সেতুর মা আরো বলেন, টাকা গেলো আফোস নেই। কিন্তু আমার সন্তানটাও বিদায় নিলো আমাদের কাছ থেকে। এ কষ্ট আমি কোথায় রাখবো? পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেতুর মায়ের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, একজন সরকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে এধরনের অযৌক্তিক দ্বাবী কোন ভাবেই বৈধ নয়। কাজেই তার বিরুদ্ধেও অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আমি আমার দিক থেকে আমার অথরিটির কাছে এই অভিযোগটি তুলে ধরবো প্রতিবেদনের মাধ্যমে। তাদের মাধ্যমে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য চলতি মাসের ১০ এপ্রিল স্কুলে যাওযার জন্য বাসা থেকে বের হলে নিখোঁজ হয় সেতু মন্ডল। পরদিন ১১ এপ্রিল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার গোলাম বাজার থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে সোপর্দ করেন। উদ্ধারের ৬ দিনের মাথায় গত বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করে মিডফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে পুলিশের ধারনা মেয়েটি ধর্ষণের স্বীকার হয়েছিল এবং কোন নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়েছিল। মেয়েটি কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসার পরই আত্মহনণের পথ বেছে নেয়। ওসি সেতু মন্ডলের মা রেখা মন্ডলের বরাদ দিয়ে বলেন, মান সম্মানের ভয়ে মুখ খুলেননি। হাসপাতালে পর্যন্ত নেননি। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদনসহ কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই দুই আসামীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হতে পারে।
Be the first to comment on "সেতু মন্ডল হত্যাকান্ড: ধর্ষকরা কোন মানুষ না তারা সমাজের জঘন্যতম কীট"