শিরোনাম

মুন্সীগঞ্জে ট্যাংকারে ধাক্কায় মাটিভর্তি ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ২০, জীবিত উদ্ধার ১৪,

উদ্ধারকারী জাহাজ তলব

 

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরঝাপটার কাছে মেঘনা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারের ধাক্কায় মাটিবোঝাই ট্রলারডুবির ২০ নিখোঁজ রয়েছে। সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছে ১৪ জন শ্রমিক। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

মুন্সীগঞ্জ সদরের ইউএনও ফারুক আহম্মেদ বুধবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কুয়াচ্ছন্ন গভীর রাতের এই ঘটনায় দুর্ঘটনার স্থান চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছিল। বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে এখন দুর্ঘনার স্থান এবং দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে মুন্সীগঞ্জের প্রশাসন ছাড়াও পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।

 

ইউএনও জীবত শ্রমিকদের বরাদ দিয়ে জানান, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ট্রলারে মাটি তুলে ৩৪ জন শ্রমিক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী নিয়ে যাচ্ছিল। বিপরীত দিক থেকে আসা একটি তেলবাহী ট্যাংকার ট্রলারে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে অন্যরা সাঁতারে প্রাণে বাঁচলেও ট্রলারটির কেবিনের ভেতরে ঘুমন্ত ২০ শ্রমিকের ভাগ্যে কি হয়েছে এখনও জানা যায়নি। এদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। ১৭ জনের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এবং একজনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জনান, মঙ্গলবার পাবনার ভাঙ্গুরা থানায় ওসির মাধ্যমে ট্রলার ডুবির ঘটনা অবগত হয়ে মেঘনায় নৌপুলিশ দিয়ে সন্ধান চালায়। কন্তু নৌ পুলিশ এ রকম কোন ঘটনার তথ্য মিলাতে পারেনি। বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

 

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসাক সায়লা ফারজানা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী জাহাজ তলব করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ  রয়েছে।

 

দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রাতের বেলায়, তাই দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছে। গজারিয়া ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা এবং চাঁদপুরের উত্তর মতলবের সিমান্তবর্তী এলিাকা এটি। বড় আকারের এই মেঘনায় ট্রলারটি খুঁজে ফিরছে সকলে। েএদিকে নিখোঁজের অনেক স্বজনারাও আসতে শুরু করেছে। ট্রলার ডুবিতে বেঁচে যাওয়া কয়েক শ্রমিক দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করার জন্য সন্ধানকারী জাহাজে অবস্থান করছে।

 

ঘটনাস্থলে গজায়িরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান সাদী  জানান, মেঘনা অনেক বড় নদী। তাই সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

 

নৌ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান, নৌ পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের এসপি হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে রয়েছেন। ট্রলার ডুবিতে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া শ্রমিক পাবনার  মো. হাবিবুর রহমান ও পরশ কুমার সিং  বলেন,  নদীতে প্রায় এক ঘন্টা সাঁতার কাটার পর একটি বালুর জাহজে উঠে প্রাণ বাঁচান। বেঁচে যাওয়া আরেক শ্রমিক মামুন আলী বলেন, আমরা ১৪ জন শ্রমিক বেঁচে গেলেও কেবিনের ভেতরে থাকা ২০ জনের কেউই বেরুতে পারেনি। কনকনে শীতে অন্ধার রাতের সেই বেঁচে যাওয়ার ঘটনা বর্ণাণা করতে গিয়ে মামুন আলী বলেন, তেলের টেঙ্কারটি তাদের ট্রলারে ওপরে উঠে দেয়। এরপরেই ট্রলারের বাইরে থাকা শ্রমিকরা ছটিকে নদীতে পরে যান, ডুবে যায় বড় আকারের ট্রলারটি। কিন্তু তেলের ট্যাঙ্কটি তাদের উদ্ধারে কোন সাহায্য পর্যন্ত করেনি।

নিখোঁজ ২০ জনের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় মিলেছে, তারা হলেন- পাবনার ভাংগুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের

 

 

মুণ্ডমালা গ্রামের গোলাই প্রামাণিকের ছেলে সোলেমান হোসেন, জব্বার ফকিরের ছেলে আলিফ হোসেন ও মোস্তফা ফকির, গোলবার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন ১, আব্দুল মজিদের ছেলে জাহিদ হোসেন, নূর ইসলামের ছেলে মানিক হোসেন, ছায়দার আলীর ছেলে তুহিন হোসেন, আলতাব হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন-২, লয়ান ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম, দাসমরিচ গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে ওমর আলী ও মান্নাফ আলী, তোজিম মোল্লার ছেলে মোশারফ হোসেন, আয়ান প্রামাণিকের ছেলে ইসমাইল হোসেন, সমাজ আলীর ছেলে রুহুল আমিন, মাদারবাড়িয়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে আজাদ হোসেন,  চণ্ডিডুর গ্রামের আমির খান ও আব্দুল লতিফের ছেলে হাচেন আলী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার গজাইল গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রহমত আলী।

মো: রাব্বি/ দৈনিক সভ্যতার আলো

 

 

Be the first to comment on "মুন্সীগঞ্জে ট্যাংকারে ধাক্কায় মাটিভর্তি ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ২০, জীবিত উদ্ধার ১৪,"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*