শিরোনাম

চাঁদাবাজি আবারও শুরু পরিবহনে

কিছুদিন বন্ধ থাকার পর মুন্সীগঞ্জ জেলায় আবারও পরিবহন খাতে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বাস, ট্রাক, টেম্পো, অটোরিকশা ও অটোবাইকের অর্ধশতাধিক স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন এ চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীর কাছে জিম্মি এসব স্ট্যান্ড। এসব স্ট্যান্ড থেকে উত্তোলন করা চাঁদার টাকা ভাগ-বণ্টনের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে বড় নেতা ও পাতি নেতার হাতে। প্রকাশ্যে স্ট্যান্ডগুলোতে চাঁদা আদায়ের দৃশ্য চোখে পড়লেও সংশ্নিষ্ট প্রশাসন নিশ্চুপ। তবে ট্রাফিক পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, কিছুদিন বন্ধ থাকলেও ফের জেলার বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে সিরিয়ালের নামে চাঁদা আদায় শুরু হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সরেজমিন দেখা গেছে, ট্রাক, বাস, সিএনজিচালিত স্কুটার, অটোবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এমনকি এ চাঁদা আদায়ের জন্য লাইনম্যানও নিয়োগ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরি নিচ্ছেন লাইনম্যানরা। মুন্সীগঞ্জ সদরের চাঁদা আদায়ের পয়েন্টগুলো হচ্ছে- উপকণ্ঠ মুক্তারপুর সেতুর ঢাল, জেলা শহরের থানার পোল মোড়, খালইস্ট মোড় টেম্পো স্ট্যান্ড, মাঠপাড়া চৌরাস্তা, মুন্সীরহাট, খাসেরহাট, চিতলিয়া, বাংলাবাজারসহ একাধিক পয়েন্ট। এসব অবৈধ স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন সিরিয়ালপ্রতি চাঁদা আদায় করছেন লাইনম্যানরা। এভাবে মাসে লাখ লাখ টাকা আদায়ের পর ভাগ-বাটোয়ারায় চাঁদার টাকা বণ্টন হয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক লেবাসধারী বড় ও পাতি নেতাদের পকেটে। লাইনম্যান মো. কাশেম জানান, প্রতিদিন মজুরি হিসেবে তিনি ৫০০ টাকা পান। চাঁদার বাকি টাকা এক প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করেন।

 

এ চাঁদা আদায়ের নেপথ্যে কে বা কারা জড়িত, তা জানতে চাইলে লাইনম্যানরা অপারগতা প্রকাশ করেন।

 

সদর ট্রাফিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, কিছুদিন বন্ধ থাকলেও মুক্তারপুর সেতুর ঢালসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবহন শ্রমিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা এ চাঁদা আদায়ের সঙ্গে জড়িত। তবে ট্রাফিক পুলিশ স্ট্যান্ড ও বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের সঙ্গে জড়িত নয়।

 

এদিকে, সদরের মতো টঙ্গিবাড়ী উপজেলা সদরসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টে বিভিন্ন যানবাহন থেকে প্রতিদিন সিরিয়ালের নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। অন্যদিকে একই পরিস্থিতি লৌহজংয়ের শিমুলিয়া  ফেরিঘাট এলাকায়। সেখানে বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গত বছর চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুই ট্রাফিক পুলিশকে কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারও করা হয়।

 

বিআরটিএর মুন্সীগঞ্জ জেলা সার্কেল কার্যালয় সূত্র মতে, জেলায় মোট ৬৪৮টি আটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। বাকি কয়েক হাজার অটোরিকশা চলাচল করে থাকে স্ট্যান্ড কমিটিকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে। এসব অবৈধ অটোরিকশা বন্ধের ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মামলা দেওয়া হচ্ছে।

— কাজী দিপু/ সমকাল

Be the first to comment on "চাঁদাবাজি আবারও শুরু পরিবহনে"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*