স্টাফ রিপোর্টার : জীবন পরিবর্তনের জন্য দেশের অনেক নারী কর্মীও যাচ্ছেন প্রবাসে।।মধ্য প্রাচ্যে গিয়েছেন হাজার নারী গৃহকর্মী। সৌদি আরবে গেছেন নারী কর্মীরা। তবে নারীরা হয়েছে অবহেলিত, ভয়াবহ মাত্রায় বেড়েছে নিপীড়ন- পাশবিক নির্যাতন। সৌদিতে যাওয়ার পর থেকেই কিছু সংখ্যক নারী কর্মী ফিরে আসতে শুরু করেন। ফিরে আসার সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে। যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রবাসে তার উল্টো টা হয়েছে তাদের বেলায়। ফিরে এসেছেন সহায়-সম্বলহীনভাবে।যারা ফিরে আসছেন তাদের অভিযোগ-
- বাসায় আটকে রেখে কাজ করানো হয়েছে। অধিক পরিশ্রম করানো হয়েছে।
-
ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয়নি। তরকারি ছাড়া দিনে একটি শুকনো রুটি ছাড়া আর কিছু খেতে দেওয়া হতো না।
-
বাইরে বের হওয়া বা মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ ছিল না।
-
মারধর করা হতো নিয়মিত
-
শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, বিশেষ করে পাশবিক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা।
তাদের নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত খবর প্রকাশ হচ্ছে। এতো কষ্ট ত্যাগ তিতিক্ষার পরও তারা হাল ছাড়েনি। মিডিয়া প্রবাসী নারী কর্মিদের পাশে দাঁড়ায় সব সময়।এই নারী কর্মীরাও প্রবাস হতে অনেক রেমিটেন্স দেয় আমাদের।
এবার বলি, আমাদের দেশেও প্রবাসী নারী কর্মীদের নানান হয়রানী, ও সমস্যার কথা। রাখি ( ২৫) ছদ্ম নাম। মুন্সীগঞ্জের মেয়ে রাখি। বাবা ভাই বোনদের সুখের কথা ভেবে কয়েক বছর আগে পাড়ি দেন মধ্য প্রাচ্যে। সেখানে দিনের পর দিন তাকে কষ্ট করতে হয়েছে পরিবারের সুখের জন্য। তার ভাষ্যমতে, যে কফিলের বাড়িতে কাজ করতেন তিনি ওকে আদর করতেন। এই কো কয়েক মাস আগে দেশে ফিরেছেন রাখি। যে পরিমাণ অর্থ নে আয় করেছে,আত্মীয় স্বজন পরিবারের সংসারের পেছনে খরচ করে বেশি কিছু করা সম্ভব হয়নি তার।
অবিবাহিত রাখির এবার সংসার করার পালা। ঘটক আত্মীয় স্বজন সকলেই পাত্র দেখেন কিন্তু যখন পাত্ররা শুনছেন মেয়েটি প্রবাসী নারী কর্মী। আর এটাই তার অপরাধ। প্রবাসী নারী হওয়ায় প্রতিনিয়ত তার বিবাহের সমন্ধ ভেঙ্গে যাচ্ছে,কারণ তিনি প্রবাসে ছিলেন। এরকম অসংখ্য রাখিদের সাথে ঘটছে এই সব ঘটনা। প্রবাস থেকে এসেছেন তাই তাকে বিবাহে এতো অনিহা। রাখি এখন আগের মত ঘর হতে বের হয় না,চুপ থাকে। প্রবাসে যাওয়া টা কি তার অপরাধ?।
মুন্সীগঞ্জের অনেকে প্রবাসী নারী কর্মী রয়েছেন প্রবাসে। কিন্তু দেশে এসেও তারা হচ্ছেন সামাজিক সহ অন্যান্য কর্মকান্ডে অবহেলিত ও ক্ষতিগ্রস্থ। অভিবাসনে ফেরত নারী কর্মিদের এই ক্ষতির দ্বায় কি কেউ দিতে পারেন নিজেদের দৃষ্টিতে। রাখিরা নিরবে কাঁদে, কেন এমন হয়। দৃষ্টি ভঙ্গি বদলাতে হবে। প্রবাসী নারী শ্রমিকদের যথার্থ মূল্যায়ন করতে হবে।। তাদের সামাজিক ভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ দিতে হবে। রাখিরা কষ্ট করে, নিরবে কাঁদে। আর তাদের এই ক্ষতি যেমন কেউ পুষিয়ে দিতে পারবেন না, তেমনি দেশে রেমিটেন্স আয় করা এই নারী শ্রমিকদের সকল অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। নারী তুমি হাসো, কাঁদো, গড়ে তুলো নিজেকে। তোমাদের গল্পে হয়তো একদিন নতুন ইতিহাস রচনা হবে।
Be the first to comment on "প্রবাসী নারী কর্মী রাখিদের গল্প"