ইজি টু ক্যারি ফুডের মধ্যে প্রথমেই আসে বাদামের কথা। এখনকার এই ব্যস্ত দিনে কাজের ফাকে সময় করে খাওয়ার কথা মাথাই থাকেনা। প্রায় সময় অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার খেয়ে থাকি। কিন্তু, কাজের ফাকে যদি রোজ অল্প করে বাদাম খাওয়া যায় তবে মন্দ হয় না।
বাদাম শুধু খেতেই যে অসাধারন তা নয়, নানা পুষ্টিগুনেও ভরপুর। যার ফলে এই বাদাম বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাদামের ধরণ-
বাদাম বলতে সব ধরণের বাদামকেই এক্ষেত্রে ধরা হয়, যেমন- চিনে বাদাম, আখরোট , কাজু , আমন্ড , পেস্তা , চেস্ট নাট, ব্রাজিলনাট প্রভৃতি।
বাদামের মধ্যে যা থাকে-
আকারে ছোট হলেও সকল প্রকার খাদ্য গুণাগুণ এতে বর্তমান। যেমন- ফ্যাটি অ্যাসিড , ফাইবার , কার্বোহাইড্রেট , লিউটিন , জিজ্যানথিনের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ।
বাদামের উপকারিতা-
বাদামের মধ্যে প্রোটিন , ভিটামিন , মিনারেলস সকল প্রকার খাদ্যগুন রয়েছে। নিয়মিত বাদাম খেলে শরীর সুস্থ , সবল, কর্মক্ষম ও নিরোগ থাকে।
বাদাম যেই সমস্ত রোগ থেকে বাঁচায়-
১) থাইরয়েড-: ব্রাজিল নাটের মধ্যে আয়োডিন থাকে যা এনার্জি মেটাবলিজমে সাহায্য করে। ফলে এই নাট হাইপো ও হাইপার উভয় থাইরয়েডের জন্য উপকারি।
২) ত্বক- : দূষণের প্রভাব থেকে ত্বককে মুক্ত করতে বাদামের জুড়ি নেই।
৩) দেহের বিভিন্ন ফাংগাল ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমান বাদাম খেলে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল হয় ।
৪) ক্যানসার- : আমন্ডের মধ্যে ওলেয়িক অ্যাসিড , সেলে নিয়াম , ভিটামিন ই এবং বিভিন্ন ফাইটো কেমিক্যালস ক্যানসার প্রতিরোধে খুবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫) হাই কোলেস্টেরল-আখরোট ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড , ফাইবার , ভিটামিন ই ইত্যাদি থাকায়, নিয়মিত কিছু পরিমানে আখরোট খেতে পারলে রক্তের মধ্যে বেড়ে যাওয়া কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক হয়।
৬)) ওবেসিটি-কনভেনশনাল লো ক্যালোরি হাই ফাইবার জাতীয় ডায়েটের সঙ্গে কিছু আমন্ড খেলে তাড়াতাড়ি ওজন কমে।
৭) হাঁপানি- যারা দীর্ঘদিন ধরে হাঁপানিতে ভুগছেন, তাঁরা যদি নিয়মিত গরম দুধের সঙ্গে আখরোট খান তাহলে হাঁপানিতে অনেক রিলিফ পাওয়া যায়।
৮) বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বর্তমানে কোলেস্টেরলের সমস্যা বেশ বড় আকার ধারন করেছে। কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হল অপুষ্টিকর ও তৈলাক্ত খাবার। শরীরের মাত্রাধিক কোলেস্টেরল হৃদরোগ, উচ্চ রক্ত চাপ, ওজন বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিস এর মতো কঠিন রোগ সৃষ্টি করে। বাদামের অসাধারন কার্যকরী ফ্যাট শরীর থেকে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৯) বাদাম শরীরের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন ১০-১২ টি বা এক মুঠো চিনা বাদাম খেতে পারেন শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে।
১০) ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে চিনা বাদাম রক্ত থেকে সুক্রোজ এর মাত্রা কমায়। প্রতিদিন সকালে এটি বা এর মাখন নাস্তার সাথে খেতে পারেন।
১১) তাছাড়া রাতে ১০-১৫ টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস নির্মূলে বিশেষ ভাবে কার্যকরী।
১২) ওজন কমাতে বেশ কার্যকরীঃ বাংলাদেশে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। শরীর থেকে ওজন কমাতে ভালো ফ্যাটের প্রয়োজন অত্যাবশ্যক। চিনা বাদাম থেকে আপনি সেই ভালো ফ্যাট পাবেন।
১৩) প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এক মুঠো বাদাম যুক্ত করে আপনি অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
১৪) তাছাড়া চিনে বাদাম আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।
১৫) স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ কিছু কিছু মানুষের স্মৃতি শক্তি তুলনামুলক ভাবে অন্যদের চেয়ে কম। খুব অল্প বয়সেই অনেকেই ভুঘছেন মস্তিষ্কের সমস্যায়। ভুলে যাচ্ছেন সামান্য বিষয় এবং অনেক চেষ্টা করেও মনে রাখতে পারছেন না। এমনটা হয় যখন আমাদের মস্তিস্ক পরিমান মতো পুষ্টি পায় না। একে মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে গন্য করা যায়। চিনা বাদামে প্রচুর পরিমানে বি৩ আছে যা মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
১৬) প্রতিদিন চিনা বাদাম বা এর মাখন খাবেন, যাতে করে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মস্তিস্ক পেতে পারেন।
১৭) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ছোটো ছোটো কারনে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন যেমন ঠাণ্ডা, কাশি, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, খাওয়ায় অরুচি এবং নিদ্রাহীনতা। শরীরে সঠিক পরিমানে পুষ্টি না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বাদাম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
১৮) চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে কঠিন রোগকে বাসা বাধতে বাঁধা দান করে। তাই, প্রতিদিন চিনা বাদাম খেয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।
১৯) চিনা বাদামের সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা উপভোগ করতে প্রতিদিন অবশ্যই একমুঠো চিনা বাদাম খেতে পারেন।
ডেস্ক নিউজ
Be the first to comment on "স্বাস্থ্য কথন : চিনে বাদামের গুণাগুণ"