শিরোনাম

মুন্সীগঞ্জে বিএনপির প্রেস্টিজ আ.লীগের চ্যালেঞ্জ

 

মুন্সীগঞ্জে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি সংসদীয় আসনে একজন মহিলাসহ ৩০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর বিকল্প ধারার মহাজোটে আগমনে অস্বস্তিতে বিএনপি ও আ.লীগের প্রার্থী এবং নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের আগে সমস্যার সমাধান না হলে বিএনপি ও আ.লীগের জন্য ঘরের শত্রু বিভীষণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগামী নির্বাচন বিএনপির তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর জন্য প্রেস্টিজ ইসু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আ.লীগের জন্য আসন ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ।

 

মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিত। বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বের প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্ব›দ্বী আ.লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আ.লীগ প্রার্থীরা বিএনপির তিন হেভিওয়েট প্রার্থীকে পরাজিত করে জেলার তিনটি আসনই দখল করে নেয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তিনটি আসন পুনরুদ্ধার করতে চায়। ব্যক্তিস্বার্থ, অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর মনোনয়ন না পাওয়ার মনোকষ্ট ঐক্যফ্রন্ট এবং জোট-মহাজোটের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা এতে আসন হারাতে পারে আ.লীগ ও বিএনপি।

মুন্সীগঞ্জ-১ (শ্রীনগর-সিরাজদিখান) আসনে আ.লীগের একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও জোট-মহাজোটের কারণে কপাল পুড়ল দীর্ঘ দিন মাঠে থাকা জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, আ.লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভ‚ঁইয়া ডাবলু, গোলাম সারোয়র কবীর। মাহি বি. চৌধুরী মহাজোটের মনোনয়ন চাওয়ায় আ.লীগের নেতাকর্মীদের হিসাব-নিকাশ উল্টে গেল। মাহির মনোনয়ন আ.লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনের দিক থেকে কতটুকু মেনে নেন তা দেখার বিষয়। বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. মমিন আলী, মীর শরফত আলী সপু। বিএনপি নেতা শেখ মো. আবদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন শেখ সিরাজুল ইসলাম। বর্তমান সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় মনোনয়ন চাননি। গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে সুকুমার রঞ্জন ঘোষ বিএনপি প্রার্থী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রায় ৪৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এ আসনটি বিএনপি থেকে উদ্বার করেন।

 

মুন্সীগঞ্জ-২ (লৌহজং-টংগীবাড়ী) আসনে আ.লীগের একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও সাবেক হুইপ সেগুপ্তা ইয়াসমীন এমিলির ভাগ্যে নৌকার টিকিট জোটে। বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পান সাবেক প্রতিমন্ত্রী মিজানুর রহমান সিনহা, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ। তবে মিজানুর রহমান সিনহার মনোনয়ন নিশ্চিত। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে পড়লেন তিনি। টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় নিজ দলীয় কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় অভিযোগের তীর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর রিপন মল্লিকের দিকে যায়। জনা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মিজানুর রহমান সিনহা ও রিপন মল্লিকের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। রিপন মল্লিক কমিটি থেকে বাদ পড়ায় অভিযুক্ত হন মিজানুর রহমান সিনহা। এর জেরই এ সংঘর্ষ হয়। ইসলামী আন্দোলনের মো. মুনসুর হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। অন্য কোনো দলের শক্তিশালী প্রার্থী নেই।

 

মুন্সীগঞ্জ-৩ (মুন্সীগঞ্জ সদর-গজারিয়া) আসনে অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আ.লীগের মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস। জোর প্রচার ছিল, এখানে মহাজোটের প্রার্থী হচ্ছেন বিকল্প ধারার চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এখানে আ.লীগের মধ্যে বিরোধ নির্বাচনে কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিরোধ মেটাতে মনোনয়ন পাওয়ার পর অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস দোয়া নিতে যান মো. মহিউদ্দিনের কাছে। সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিএনপি প্রার্থী সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাই। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান রতন মনোনয়নপত্র নিলেও জমা দেননি। জাতীয় পার্টি থেকে মো. আব্দুল বাতেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রুহুল আমীন ভূঁইয়া মনোনয়নপত্র জমা দেন।

ইনকিলাব

 

 

Be the first to comment on "মুন্সীগঞ্জে বিএনপির প্রেস্টিজ আ.লীগের চ্যালেঞ্জ"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*