বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল আহাম্মেদ
ষড়ঋতু দেশ বাংলাদেশ, গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শীত বসন্ত, এই ছয় ঋতু আমাদের প্রকৃতিতে ছয়টি বার্তা বহে আনে, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম, বর্ষার বৃষ্টিপাত, শরতের কাশফুল, হেমন্তের ফসলের মাঠ, শীতের শৈত্যপ্রবাহ, বসন্তের প্রাকৃতির বাহারি সাঁঝ।
চলছে বর্ষাকাল,আষাঢ়ের প্রথম প্রহর দেখা নেই আষাঢ়ের কদম ফুল।বাদল দিনে প্রথম কদম ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক।আষাঢ় মাসের নাম করণ হয়েছে তারার নামে ।অন্যান্য মাসের নাম করণে যেমনটি ঘটেছে ।সে তারার নাম ‘আষাঢ়া’।অর্থ পানি তার বৈভব।
‘এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘনঘোর বরিষায়’। বাংলা কবিতায় এভাবেই বৃষ্টিস্নাত সজীবতার বিভিন্ন রূপ নিয়ে হাজির হয় বর্ষা। ষড়ঋতুর এ দেশে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস বর্ষা ঋতু।
বাঙালির প্রিয় ঋতুর একটি। আর এই বর্ষাতেই কদম ফুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণ যুগে যুগে শহর কিংবা গ্রামবাসীদের মুগ্ধ করে। বর্ষা এলেই কদম ফোটে, চোখ ধাঁধিয়ে দেয় ফুলপ্রেমীদের। খাল-বিলের উপচেপড়া পানি যেমন শাপলাকে সাজায়, তেমনি চারপাশের পরিবেশকে মাতিয়ে তোলে বর্ষার কদম ফুল। বর্ষা মানেই হলুদ-সাদা মিশ্র রঙের কদম ফুলে গাছ ছেয়ে যাওয়া। বর্ষা মানেই গুচ্ছ গুচ্ছ কদম ফুলের মিষ্টি সুবাস। বর্ষা মানেই কদম ফুলের মতো তুলতুলে নরম বৃষ্টির রিনিঝিনি ধ্বনি। কদম গাছের শাখায় পাতার আড়ালে ফুটে থাকা অজস্র কদম ফুলের সুগন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাই তো কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত। কদম ফুলের আরেক নাম হল নীপ। ফুলের সৌন্দর্যের মতো আরও কয়েকটি সুন্দর নাম রয়েছে- যেমন বৃত্তপুষ্প, সর্ষপ, ললনাপ্রিয়, সুরভি, মেঘাগমপ্রিয়, মঞ্জুকেশিনী, কর্ণপূরক, পুলকি, সিন্ধুপুষ্প ইত্যাদি।পুরো ফুলটিকে একটি ফুল মনে হলেও এটি আসলে অসংখ্য ফুলের গুচ্ছ। এ ফুলের ভেতরে রয়েছে মাংসল পুষ্পাধার, যাতে হলুদ রঙের ফানেলের মতো পাপড়িগুলো আটকে থাকে। পাপড়ির মাথায় থাকে সাদা রঙের পরাগদণ্ড। ফল মাংসল, টক এবং বাদুড় ও কাঠবিড়ালির প্রিয় খাদ্য। ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহন।
কদম ছাড়া কী গ্রাম হয়! সেখানে এরা অবহেলা-অনাদরেই বাড়ে ও বাঁচে। একসময় লোকালয়ের অগভীর বন-বাদাড়ে অঢেল ছিল। এখন সংখ্যায় কমেছে। কদমের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। কদম ফুল হিসেবে অতি প্রাচীন বৈষ্ণব সাহিত্য থেকে লোকগাথা, পল্লীগীতি ও রবীন্দ্র-কাব্য পর্যন্ত বহুল উপমায় বিভূষিত তার গুণগাথা।
সাধারণত আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতেই কদম ফোটে। আবার কখনো কখনো বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠেও ফুটতে দেখা যায়। কদম বর্ণে, গন্ধে, সৌন্দর্যে এদেশের রূপসী তরুর অন্যতম। গাছ দীর্ঘাকৃতির। কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। পাতা বিরাট, ডিম্বাকৃতি, উজ্জ্বল সবুজ, তেল চকচকে এবং বিন্যাসে বিপ্রতীপ। শীতে সব পাতা ঝরে যায়। বসন্তে কচিপাতা আসে উচ্ছ্বাস নিয়ে।
বন-জোপঝাড় হাওরবাওর-খাল-বিলে-ভয়পুর আমাদের মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুর,পথের-ধারে খালের পাড়ে,বন-বাদারে ছিল অসংখ্য কদমগাছ, বর্ষা এলেই ডালে ডালে শোভা পেত কদম ফুল, দৃষ্টি জুড়াইত কদম ফুলের বাহারি সাঝ।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের জীবন ধারনে অনেক পরিবর্তন এসেছে,রাস্তা ব্রিজ বাড়ি-ঘর নির্মাণের ফলে, প্রতি ইঞ্চি জমিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে ব্যবহার করা হয়, তাই আমদের মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুরে তেমন ঝোপ-ঝার নাই,নেই খাল-বিলের পাশে প্রচুর পরিত্যাক্ত জমি, যেখানে কদম গাছ জন্ম নিত, বর্ষার বর্ষণের সাথে সাথে কদম ফুলের হাঁসি চোখে পড়ত, তাই বলে এখনও কদম ফুল হারিয়ে যায় নাই, এখনো প্রচুর কদম গাছ আছে,যে গাছে আষাঢ়ে ফুটে কদমফুল,শিশু-কিশোররা কদমফুল নিয়ে মেতে উঠে,যা দেখে আমাদের চক্ষু জুড়ায়, আমদের জীবনধারনের মুল অবলম্বন খাদ্য-বস্র-বাসস্থান,এই জন্য আমাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়,তাই প্রয়োজন পরে মনের প্রশান্তি,মনের এই প্রশান্তি এনে দেয় কদম ফুলের মনোরম বাহারি হাঁসি, তাই কদম ফুল আমাদের জীবনেরই একটি অংশ, জীবনের জন্যই কদম ফুলকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
তাইতো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ নাথ ঠাকুর কদম ফুলকে নিয়ে রচনা করে গেছেন গান, সেই গানেরই অংশ কদম ফুলে প্রেমিকদের প্রতি নিবেদন করলাম।
বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান,
আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান॥
মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে রেখেছি ঢেকে তারে
এই-যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান॥
আজ এনে দিলে, হয়তো দিবে না কাল–
রিক্ত হবে যে তোমার ফুলের ডাল।
এ গান আমার শ্রাবণে শ্রাবণে তব বিস্মৃতিস্রোতের প্লাবনে
ফিরিয়া ফিরিয়া আসিবে তরণী বহি তব সম্মান॥
সম্পাদক,চেতনায় একাত্তর
বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল আহাম্মেদ
ষড়ঋতু দেশ বাংলাদেশ, গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শীত বসন্ত, এই ছয় ঋতু আমাদের প্রকৃতিতে ছয়টি বার্তা বহে আনে, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম, বর্ষার বৃষ্টিপাত, শরতের কাশফুল, হেমন্তের ফসলের মাঠ, শীতের শৈত্যপ্রবাহ, বসন্তের প্রাকৃতির বাহারি সাঁঝ।
চলছে বর্ষাকাল,আষাঢ়ের প্রথম প্রহর দেখা নেই আষাঢ়ের কদম ফুল।বাদল দিনে প্রথম কদম ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক।আষাঢ় মাসের নাম করণ হয়েছে তারার নামে ।অন্যান্য মাসের নাম করণে যেমনটি ঘটেছে ।সে তারার নাম ‘আষাঢ়া’।অর্থ পানি তার বৈভব।
‘এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘনঘোর বরিষায়’। বাংলা কবিতায় এভাবেই বৃষ্টিস্নাত সজীবতার বিভিন্ন রূপ নিয়ে হাজির হয় বর্ষা। ষড়ঋতুর এ দেশে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস বর্ষা ঋতু।
বাঙালির প্রিয় ঋতুর একটি। আর এই বর্ষাতেই কদম ফুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণ যুগে যুগে শহর কিংবা গ্রামবাসীদের মুগ্ধ করে। বর্ষা এলেই কদম ফোটে, চোখ ধাঁধিয়ে দেয় ফুলপ্রেমীদের। খাল-বিলের উপচেপড়া পানি যেমন শাপলাকে সাজায়, তেমনি চারপাশের পরিবেশকে মাতিয়ে তোলে বর্ষার কদম ফুল। বর্ষা মানেই হলুদ-সাদা মিশ্র রঙের কদম ফুলে গাছ ছেয়ে যাওয়া। বর্ষা মানেই গুচ্ছ গুচ্ছ কদম ফুলের মিষ্টি সুবাস। বর্ষা মানেই কদম ফুলের মতো তুলতুলে নরম বৃষ্টির রিনিঝিনি ধ্বনি। কদম গাছের শাখায় পাতার আড়ালে ফুটে থাকা অজস্র কদম ফুলের সুগন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাই তো কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত। কদম ফুলের আরেক নাম হল নীপ। ফুলের সৌন্দর্যের মতো আরও কয়েকটি সুন্দর নাম রয়েছে- যেমন বৃত্তপুষ্প, সর্ষপ, ললনাপ্রিয়, সুরভি, মেঘাগমপ্রিয়, মঞ্জুকেশিনী, কর্ণপূরক, পুলকি, সিন্ধুপুষ্প ইত্যাদি।পুরো ফুলটিকে একটি ফুল মনে হলেও এটি আসলে অসংখ্য ফুলের গুচ্ছ। এ ফুলের ভেতরে রয়েছে মাংসল পুষ্পাধার, যাতে হলুদ রঙের ফানেলের মতো পাপড়িগুলো আটকে থাকে। পাপড়ির মাথায় থাকে সাদা রঙের পরাগদণ্ড। ফল মাংসল, টক এবং বাদুড় ও কাঠবিড়ালির প্রিয় খাদ্য। ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহন।
কদম ছাড়া কী গ্রাম হয়! সেখানে এরা অবহেলা-অনাদরেই বাড়ে ও বাঁচে। একসময় লোকালয়ের অগভীর বন-বাদাড়ে অঢেল ছিল। এখন সংখ্যায় কমেছে। কদমের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। কদম ফুল হিসেবে অতি প্রাচীন বৈষ্ণব সাহিত্য থেকে লোকগাথা, পল্লীগীতি ও রবীন্দ্র-কাব্য পর্যন্ত বহুল উপমায় বিভূষিত তার গুণগাথা।
সাধারণত আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতেই কদম ফোটে। আবার কখনো কখনো বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠেও ফুটতে দেখা যায়। কদম বর্ণে, গন্ধে, সৌন্দর্যে এদেশের রূপসী তরুর অন্যতম। গাছ দীর্ঘাকৃতির। কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। পাতা বিরাট, ডিম্বাকৃতি, উজ্জ্বল সবুজ, তেল চকচকে এবং বিন্যাসে বিপ্রতীপ। শীতে সব পাতা ঝরে যায়। বসন্তে কচিপাতা আসে উচ্ছ্বাস নিয়ে।
বন-জোপঝাড় হাওরবাওর-খাল-বিলে-ভয়পুর আমাদের মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুর,পথের-ধারে খালের পাড়ে,বন-বাদারে ছিল অসংখ্য কদমগাছ, বর্ষা এলেই ডালে ডালে শোভা পেত কদম ফুল, দৃষ্টি জুড়াইত কদম ফুলের বাহারি সাঝ।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের জীবন ধারনে অনেক পরিবর্তন এসেছে,রাস্তা ব্রিজ বাড়ি-ঘর নির্মাণের ফলে, প্রতি ইঞ্চি জমিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে ব্যবহার করা হয়, তাই আমদের মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুরে তেমন ঝোপ-ঝার নাই,নেই খাল-বিলের পাশে প্রচুর পরিত্যাক্ত জমি, যেখানে কদম গাছ জন্ম নিত, বর্ষার বর্ষণের সাথে সাথে কদম ফুলের হাঁসি চোখে পড়ত, তাই বলে এখনও কদম ফুল হারিয়ে যায় নাই, এখনো প্রচুর কদম গাছ আছে,যে গাছে আষাঢ়ে ফুটে কদমফুল,শিশু-কিশোররা কদমফুল নিয়ে মেতে উঠে,যা দেখে আমাদের চক্ষু জুড়ায়, আমদের জীবনধারনের মুল অবলম্বন খাদ্য-বস্র-বাসস্থান,এই জন্য আমাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়,তাই প্রয়োজন পরে মনের প্রশান্তি,মনের এই প্রশান্তি এনে দেয় কদম ফুলের মনোরম বাহারি হাঁসি, তাই কদম ফুল আমাদের জীবনেরই একটি অংশ, জীবনের জন্যই কদম ফুলকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
তাইতো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ নাথ ঠাকুর কদম ফুলকে নিয়ে রচনা করে গেছেন গান, সেই গানেরই অংশ কদম ফুলে প্রেমিকদের প্রতি নিবেদন করলাম।
বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান,
আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান॥
মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে রেখেছি ঢেকে তারে
এই-যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান॥
আজ এনে দিলে, হয়তো দিবে না কাল–
রিক্ত হবে যে তোমার ফুলের ডাল।
এ গান আমার শ্রাবণে শ্রাবণে তব বিস্মৃতিস্রোতের প্লাবনে
ফিরিয়া ফিরিয়া আসিবে তরণী বহি তব সম্মান॥
সম্পাদক,চেতনায় একাত্তর
Be the first to comment on "আষাঢ়ের কদম ফুল"