মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি হত্যা মামলার আসামি এক নারী সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এই আসামিই আবার সাত বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগে বন্দি রয়েছেন। এই খবরে অবশ্য কারাগারে খুশির বন্যা বয়ে গেছে। বন্দি জীবনের কঠিন পরিবেশেও আনন্দে ভেসেছে কয়েদিরা।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগে সিজারিয়ানের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন এই মা। তার নাম সুমাইয়া। এ খবরে জেলা কারাগারের বিভিন্ন বন্দিদের মধ্যে মিষ্টি মুখ করা হয়। নবজাতকের দেখাশোনা করছেন নারী কারারক্ষীরা।
যে মা কারাগারে সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তিনি তার সাত বছর বয়সী সৎ ছেলেকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি এই মামলার একমাত্র আসামি।
পুলিশ জানায়, স্বামীর প্রথম ঘরের সন্তানকে হত্যার অভিযোগে ছয় মাস আগে গ্রেপ্তার হন সুমাইয়া। পরে আদালতে ম্যাজিস্ট্র্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তিনি। গ্রেপ্তারের সময় তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার ফরিদ উদ্দিন রুবেল জানান, বেলা ১১টার দিকে প্রসব বেদনা উঠে সুমাইয়ার। পরে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে সিজার করা হয়। এ সময় তিনি একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও জেলা কারাগার হাসপাতাল ও ওষুধের খরচ মিটিয়েছে বলে জেলার জানান।
কারাবন্দি অবস্থায় স্ত্রীর সন্তান জন্মের খবরে ছুটে আসেন স্বামী আরিফ হোসেন। তিনি একজন সেনা সদস্য। তিনি সাংবাদিকদের জানান, কারা কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পেয়ে তিনি সন্তানের মুখ দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন।
আরিফ জানান, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয় এক বছর আগে। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তাদের একটিই ছেলে সন্তান ছিল। এরপর সুমাইয়াকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি।
চলতি বছরের মে মাসের দিকে সিরাজদিখান উপজেলার বয়রাগাদি গ্রামে খুন হয় শিশু ইয়াসিন। ইয়াসিনকে হত্যার পর পুকুরের কচুরিপানার ভেতর গুম করার চেষ্টা করা হয়। পরে পুলিশ সে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে সুমাইয়াকে আটক করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন। পরে ইয়াসিনের বাবা আরিফ হোসেন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ঢাকাটাইমস
শেয়ার করুনঃ
Be the first to comment on "মুন্সীগঞ্জে সৎ ছেলে হত্যায় বন্দি মায়ের সন্তান জন্ম"